পরিচালকের বাণী
আমি মোঃ আলী আশরাফ। আমার জন্ম মধ্যে বিত্ত পরিবারে। ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতিকুলোতার মধ্যে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত হয়। পিতা দুনিয়াদারীতে মত্তো থাকার কারণে শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মাদ্রাসায় পড়ার সৌভাগ্য হয় নাই। পরে পিতা তাবলিগ জামাতে গিয়ে জীবনের গতি পরিবর্তন করেন এবং আমার ছোট তিন ভাইকে ছহি দ্বীন শিক্ষার জন্য কওমী মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। আব্বার জীবনে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করে আমি ইসলাম শিক্ষায় অনার্স, মাস্টার্স সমাপ্ত করার পর কারিয়ানা কোর্স সম্পন্ন করে ৪ ভাই মিলে ভবিষ্যতের দ্বীন প্রচার করার উদ্দেশ্যে ছেলে মেয়েদের পৃথক পৃথক মাদ্রাসা গড়ে তোলার দৃড় সংকল্প করি। আমার স্ত্রী কওমী মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ জামাত পর্যন্ত লেখাপড়া করে পবিত্র কোরআনের উপর নূরানী ট্রেনিং করে। সেই সুযোগে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় এবং আমার পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে গ্রামের ছেলে মেয়েদের নিয়ে নিজ গৃহে ২০০০ইং সনের ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকে নূরানী মাদ্রাসার কাজ শুরু করি। ২০০২ইং পর্যন্ত নূরানী মাদ্রাসা চলতে থাকে। ২০০৩ সালের শুরুতে আমার ছোট ভাই আলী আজগরের সহযোগিতায় আমাদের বাড়ির জমিতে ৭০ ফুট দীর্ঘ একটি ঘর নির্মাণ করি। আমার মামা শ্বশুর (মাওঃ মোঃ রহিম উল্লাহ, সন্দীপ, (চট্টগ্রাম) এর মাদ্রাসার নামে এই মাদ্রাসার নাম মঈনুল ইসলাম কওমী মহিলা মাদ্রাসা রাখা হয়। আমাকে বংশানুক্রোমিক ভাবে মোতোয়াল্লি করে আমার বসত বাড়ির পূর্ব অংশ থেকে মঈনুল ইসলাম কওমী মহিলা মাদ্রাসার নামে ৬ শতাংশ জমি ওয়াকফ করা হয়। ওয়াকফকারীদের নাম মোঃ আব্দুস সালাম আকন্দ, মোঃ খোরশেদ আলম আকন্দ, মোঃ আলী আশরাফ, মোঃ আল আমিন হোসাইন, মোঃ আলী মর্তুজা ও মোঃ আলী আজগর। মাদ্রাসা জামাত আকারে শুরু হইবার পর থেকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ গোলাম হায়দার, প্রফেসর মোঃ আমজাদ হোসেন ও আলতাফ হোসেন খাঁন আর্থিক ও সাবির্ক সহযোগিতা করেন। অল্প সময়ের মধ্যে মাদ্রাসাটি এলাকার ভিতরে অন্যতম জনপ্রিয় মহিলা মাদ্রাসা হিসাবে খ্যাতি লাভ করে। সিরাজগঞ্জ জেলার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মাওঃ মোঃ রেজাউল করিম এর উদ্যোগে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান মাদ্রাসার চারদিকে আর.সি.সি করে বাউন্ডারী করার জন্য রড প্রদান করেন। ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম সাহেব আমার ছোট ভাই আলী আজগর থেকে ৪ শতাংশ জমি নিজ নামে ক্রয় করে মাদ্রাসায় ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেন। যেহেতু মাদ্রাসাটি মহিলা মাদ্রাসা তাই মাদ্রাসাটির নামকরণ কোন মুসলিম খ্যাতিমান মহিলার সাথে মিল থাকা বাঞ্চনীয় বলে সাধারণ কমিটির এক অধিবেশনে আলোচনা ও বিবেচনার পর মাদ্রাসাটির নামকরণ পরিবর্তন করে ফাতেমাতুজ জহুরা কওমী মহিলা মাদ্রাসা করা হয়। তখন থেকে মাদ্রাসার যাবতীয় কাগজ পত্র, জমি রেজিষ্টারী ও অন্য সকল কার্যক্রম ফাতেমাতুজ জহুরা কওমী মহিলা মাদ্রাসার নামেই করা হয়। আনুমানিক ২০০৭ইং সালের প্রথম দিক থেকে আমার বন্ধু নব-মুসলিম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওমর ফারুক সিদ্দিকী বিশেষ দাতা হিসাবে আগমন করেন এবং তার বন্ধুদের সহযোগিতায় মাদ্রাসার পূর্ব অংশের সাধারণ ঘরটি ভেঙ্গে তিন তলা বিল্ডিং এর পাকা ঘর ও অন্য প্রয়োজনীয় কাজ সমাপ্ত করে। তিনি বোডিং শিক্ষক শিক্ষিকার বেতনের ব্যবস্থা করেন। ওমর ফারুক সাহেব তার নিজস্ব অর্থ দ্বারা ২৭ শতাংশ জমি নিজ নামে ক্রয় করে ছেলেদের দ্বীনি শিক্ষার জন্য ইউসুফিয়া কওমী ক্যাডেট মাদ্রাসার নাম করণ করে মাদ্রাসার কাজ শুরু করা হয়। তিনি মাদ্রাসার একটি এল সাইজ টিন সেট পাকা ঘর ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করেন। বেলকুচি থানার শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ শাহ আলম সাহেবকে প্রধান শিক্ষক, একজন ক্বারী সাহেব একজন শিক্ষক নিয়োগ করে মাদ্রাসার কার্যক্রম চলিতে থাকে। ২০১৩ইং সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর আমাদের মসজিদে একটি তাবলিগ জামাতের দেখাশোনা করার জন্য আকিজ গ্রুপের জনাব শেখ আমিন উদ্দিন সাহেব আসেন। আমি তাকে আমাদের মাদ্রাসায়
দাওয়াত দেই ও মেহমানদারী করি। তিনি মাদ্রাসার ছাত্রীদের অবস্থা এবং পরিবেশ দেখে অত্যন্ত খুশি হন এবং মাদ্রাসার জন্য বড় আকারে অর্থ দানের আশ্বাস প্রদান করেন। তার অঙ্গিকারের ভিত্তিতে কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী পূর্ব সমস্ত স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে ছয় তলা ভবনের কাজ শুরু করা হয়। মাদ্রাসার কার্যক্রম যথাযথ ভাবে পরিচালনা করার জন্য ছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে ইউসুফীয়া কওমী ক্যাডেট মাদ্রাসায় স্থানান্তর করা হয় এবং ইউসুফীয়া কওমী ও ক্যাডেট মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদেরকে অন্য জায়গা ভাড়া করে পরিচালনা করা হয়।